নীলগঞ্জ সম্পর্কে না জানা প্রয়োজনীয় তথ্য জেনে নিন

64 জেলার দেশ হল বাংলাদেশ।আর এই 64 টি জেলার মধ্যে একটি জেলার নাম হল কিশোরগঞ্জ যেটি ঢাকা শহর থেকে প্রায় 145 কিলোমিটার উত্তর-পূর্বদিকে অবস্থিত।কিশোরগঞ্জের একটি ইউনিয়নের নাম হচ্ছে নীলগঞ্জ।

আজকের এই টপিকে আমি আপনাদের সাথে নীলগঞ্জ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য শেয়ার করতে যাচ্ছি আশা করি, কিশোরগঞ্জ জেলায় বসবাসরত সকলের জন্য এটি খুবই তথ্যবহুল এবং উপকারী হবে।

নীলগঞ্জ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য

কিশোরগঞ্জ জেলা সদর থেকে নীলগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের মোট দূরত্ব হচ্ছে 10 কিলোমিটার।নীলগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ স্থাপিত হয় 1964 সালে। ইউনিয়নটির মোট আয়তন হচ্ছে 7.50 বর্গ কিলোমিটার। 7.50 বর্গ কিলোমিটার আয়তনবিশিষ্ট নীলগঞ্জ ইউনিয়নে বসবাসরত সর্বমোট লোক সংখ্যা- 31 হাজার 915 জন। যার মধ্যে নারীর সংখ্যা 16410 জন এবং পুরুষের সংখ্যা হল 15 হাজার 505 জন।

এখানে মোট খানার সংখ্যা হল 6476 টি।যদি মৌজার সংখ্যার দিকে লক্ষ্য করি তাহলে মোট মৌজা সংখ্যা হল 6টি।আর এই 6টি মৌজা হল: বেত্রাটি, কালাইহাটি, মহিষাকান্দি, মাইজখাপন, পাচঁধা এবং বড়খাপন।

আবার অন্যদিকে নীলগঞ্জ ইউনিয়নের মোট গ্রামের সংখ্যা হল 17 টি। এই 17 টি গ্রাম হলো- বেত্রাটি,বেপারীপাড়া,কালাইহাটি,মহিষাকান্দি,পটুয়াকান্দি,বাজারীপাড়া,ইসলামপুর,মজুমদারপাড়া, 

চৌধুরীহাটি,কাচারীপাড়া,ভাষানিয়াপাড়া,পাঁচধা,বাখরনগর,সুন্দিরবন,হাজিরগল,বাদে মাইজখাপন  এবং বড়খাপন।

নীলগঞ্জ ইউনিয়নের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

নীলগঞ্জ ইউনিয়নে উচ্চ বিদ্যালয় রয়েছে তিনটি- রেজিয়া সামাদ উচ্চ বিদ্যালয় এবং হাজী মোমতাজ উদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজ ও রফিকুল ইসলাম কলেজ।  

সর্বমোট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ঃ-৮টি। বিদ্যালয়গুলো হল- 

1. নীলগঞ্জ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, 
2. বেত্রাটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, 
3. কালাইহাটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,
4. চন্দ্রাবতী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,
5. চৌধুরীহাটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,
6. পাতুয়াইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, 
7. বড়খাপন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং 
8. পাঁচধা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। 

বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ২টি, কাচারীপাড়া বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুন্দিরবন বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এছাড়াও অনেকগুলো কিন্ডারগার্টেন বিদ্যালয় রয়েছে।হাফিজিয়া মাদ্রাসা রয়েছে একটি যার নাম হচ্ছে-পাঁচধা হাফিজিয়া মাদ্রাসা।এছাড়াও দাখিল মাদ্রাসা রয়েছে একটি যেটি কালাইহাটি অবস্থিত এবং ফোরকানিয়া মাদ্রাসা রয়েছে  18 টিরও বেশি।

মোট মসজিদের সংখ্যা 42 টি এবং মন্দিরের সংখ্যা হল একটি। এখানে স্মৃতিসৌধ রয়েছে একটি।উপমহাদেশের প্রথম মহিলা কবি চন্দ্রাবতী এখানে জন্মগ্রহণ করেন। তাছাড়া আরও বিভিন্ন জ্ঞানীগুণী মানুষ এ নীলগঞ্জ ইউনিয়নের মধ্যে রয়েছেন।

অন্যান্য যত কিছু

নীলগঞ্জ ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে নদী বয়ে গেছে মোট দুইটি। এগুলো হলো-ধলেশ্বরী নদী ও নরসুন্দা নদী। আবার অন্যদিকে খালের সংখ্যা রয়েছে মোট চারটি -কালিয়াকুড়ি, ফুলবাড়ীয়াখাল, চন্দ্রীখাল এবং লাউয়াখালী।

ইউনিয়নের মোট জমির পরিমাণ 1776 হেক্টর যার মধ্যে আবাদি জমি রয়েছে 1420 হেক্টর এবং অনাবাদি জমি রয়েছে 353 হেক্টর।গভীর নলকূপের সংখ্যা মোট 11 টি চালু রয়েছে নয়টি এবং বন্ধ রয়েছে দুইটি।

মোট রাস্তা রয়েছে 42.50 কিলোমিটার পাকা রাস্তার পরিমাণ 12.50 কিলোমিটার এবং কাঁচা রাস্তার পরিমাণ 30 কিলোমিটার।যদিও দিনদিন পাকা রাস্তার পরিমাণ বাড়ছে। তহসিল অফিস রয়েছে একটি এবং ডাকঘর রয়েছে একটি।ব্যাংক রয়েছে দুইটি-রূপালী ব্যাংক এবং গ্রামীণ ব্যাংক।

মোট ভোটার সংখ্যা হল 14 হাজার 867 জন যার মধ্যে পুরুষ রয়েছেন 7042 জন এবং মহিলা রয়েছেন 7465 জন। এখানে এনজিও অফিস রয়েছে চারটি- ব্রাক, আশা, দুস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং নউক। মোবাইল ফোনের টাওয়ার রয়েছে চারটি- গ্রামীন ,বাংলালিংক, একটেল, ওয়ারিট।

এখানে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা রয়েছে মোট 17 জন। এদের মধ্যে শহীদ যোদ্ধা হলো দুইজন:

১. জহিরুল ইসলাম ভুইয়া--পিতা- মৃত আঃ খালেক ভুইয়া,গ্রামঃ কালাইহাটি,

২. তাহের উদ্দিন ভুইয়া--পিতা- মৃত আফছর উদ্দিন ভুইয়া, গ্রামঃ বেত্রাটি।

এছাড়াও এই ইউনিয়নটিতে তালিকাভুক্ত আরও 15 জন মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন।যারা সবাই মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের দেশ স্বাধীন করার জন্য লড়াই করেছেন।তালিকা ছাড়াও হয়তো আরো অনেকে বীর যোদ্ধা রয়েছেন।তাই বলা যায় মুক্তিযুদ্ধ ক্ষেত্রে নীলগঞ্জ ইউনিয়নের অবদান অপরিসীম।

উপরোক্ত বিষয়গুলো হয়েছিল নীলগঞ্জ ইউনিয়ন সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য যাদের জানা ছিলনা আশা করি তাদের সকলের উপকারে আসবে।

তথ্যসূত্র:  মাইজখাপন কিশোরগঞ্জ বিডি